Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

শিরোনাম
রমজান মাসের আমল
বিস্তারিত

                                                        

                                 রমজান মাসের ৩০ আমল

 

الحمدللهربالعالمينوالصلاةوالسلامعلىسيدالمرسلينمحمدوآلهوأصحابهأجمعينأمابعد

 

রমাদান মাস আল্লাহ তা‘আলা এক বিশেষ নিয়ামাত। সাওয়াব অর্জন করার মৌসুম। এ মাসেই কুরআন অবতীর্ণ হয়েছে, রহমাত, বরকত ও নাজাতের মাস-রমাদান মাস।

 

আলকুরআনে এসেছে,

 

﴿شَهۡرُرَمَضَانَٱلَّذِيٓأُنزِلَفِيهِٱلۡقُرۡءَانُهُدٗىلِّلنَّاسِوَبَيِّنَٰتٖمِّنَٱلۡهُدَىٰوَٱلۡفُرۡقَانِۚ﴾ [البقرة: ١٨٥]

 

‘‘রমাদান মাস, যার মধ্যে কুরআন নাযিল করা হয়েছে লোকদের পথ প্রদর্শক এবং হিদায়াতের সুস্পষ্ট বর্ণনারূপে এবং সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারীরূপে’’ [সূরা আলবাকারাহ : ১৮৫]

 

রমাদান মাসের ফযিলাত সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

 

«أَتَاكُمْرَمَضَانُشَهْرٌمُبَارَكٌفَرَضَاللَّهُعَزَّوَجَلَّعَلَيْكُمْصِيَامَهُتُفْتَحُفِيهِأَبْوَابُالسَّمَاءِوَتُغْلَقُفِيهِأَبْوَابُالْجَحِيمِوَتُغَلُّفِيهِمَرَدَةُالشَّيَاطِينِلِلَّهِفِيهِلَيْلَةٌخَيْرٌمِنْأَلْفِشَهْرٍمَنْحُرِمَخَيْرَهَافَقَدْحُرِمَ»

 

‘‘রমাদান- বরকতময় মাস তোমাদের দুয়ারে উপস্থিত হয়েছে। পুরো মাস রোযা পালন আল্লাহ তোমাদের জন্য ফরয করেছেন। এ মাসে জান্নাতের দরজা উন্মুক্ত করে দেয়া হয়, বন্ধ করে দেয়া হয় জাহান্নামের দরজাগুলো। দুষ্ট শয়তানদের এ মাসে শৃংখলাবদ্ধ করে দেয়া হয়। এ মাসে আল্লাহ কর্তৃক একটি রাত প্রদত্ত হয়েছে, যা হাজার মাস থেকে উত্তম। যে এর কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হল, সে বঞ্চিত হল (মহা কল্যাণ হতে)’’ [সুনান আত-তিরমিযি: ৬৮৩]

 

এ মাসে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ আমল রয়েছে, যেগুলো পালন করার মাধ্যমে আমরা জান্নাতে যেতে পারি, জাহান্নাম থেকে মুক্তি পেতে পারি। নিম্নে রমাদান মাসের আমল সম্পর্কে আলোচনা করা হলো। তবে এ আমলগুলো করার জন্য শর্ত হলো:

 

এক. ইখলাস অর্থাৎ ‘‘একনিষ্ঠতার সাথে একমাত্র আল্লাহ তা‘আলার জন্যে আমল করা। সুতরাং যে আমল হবে টাকা উপার্জনের জন্য, নেতৃত্ব অর্জনের জন্য ও সুনাম-খ্যাতি অর্জনের জন্যে সে আমলে ইখলাস থাকবে না অর্থাৎ এসব ইবাদাত বা নেক আমলের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জিত হবে না বরং তা ছোট শির্কে রূপান্তরিত হতে পারে। আল-কুরআনে এসেছে,

 

﴿وَمَآأُمِرُوٓاْإِلَّالِيَعۡبُدُواْٱللَّهَمُخۡلِصِينَلَهُٱلدِّينَحُنَفَآءَ﴾ [البينة: ٥]

 

“আর তাদেরকে কেবল এই নির্দেশ দেয়া হয়েছিল যে, তারা যেন আল্লাহর ‘ইবাদাত করে তাঁরই জন্য দীনকে একনিষ্ঠ করে” [সূরা আল-বাইয়্যেনাহ : ৫]

 

দুই. ইবাদাতের ক্ষেত্রে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অনুসরণ। সহীহ হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যে সকল ইবাদাতের কথা উল্লেখ আছে সেগুলো পরিপূর্ণ অনুসরণ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে কোনো বাড়ানো বা কমানোর সুযোগ নেই। কারণ, ইবাদাত হচ্ছে তাই যা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শিখিয়ে দিয়েছেন।
কুরআনে এসেছে,

 

﴿وَمَآءَاتَىٰكُمُٱلرَّسُولُفَخُذُوهُوَمَانَهَىٰكُمۡعَنۡهُفَٱنتَهُواْۚوَٱتَّقُواْٱللَّهَۖإِنَّٱللَّهَشَدِيدُٱلۡعِقَابِ٧﴾ [الحشر: ٧]

 

‘এবং রাসূল তোমাদের জন্য যা নিয়ে এসেছেন তা তোমরা গ্রহণ কর, আর যা থেকে সে তোমাদের নিষেধ করে তা থেকে বিরত হও’ [সূরা হাশর: ৭]

 

এ বিষয়ে রাসূল সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

 

«مَنْعَمِلَعَمَلاًلَيْسَعَلَيْهِأَمْرُنَافَهُوَرَدٌّ ».

 

‘‘যে এমন ইবাদত করল যাতে আমাদের কোন নির্দেশনা নেই তা পরিত্যাজ্য হিসাবে গণ্য হবে’’। [সহীহ মুসলিম : ৪৫৯০]

 

রমাদানমাসেরগুরুত্বপূর্ণআমলগুলোহলো-

 

[১] সিয়ামপালনকরাঃ

 

ইসলামের পাঁচটি রুকনের একটি রুকন হল সিয়াম। আর রমাদান মাসে সিয়াম পালন করা ফরজ। সেজন্য রমাদান মাসের প্রধান আমল হলো সুন্নাহ মোতাবেক সিয়াম পালন করা। মহান আল্লাহ বলেন,

 

﴿فَمَنشَهِدَمِنكُمُٱلشَّهۡرَفَلۡيَصُمۡهُۖ﴾ [البقرة: ١٨٥]

 

“সুতরাং তোমাদের মধ্যে যে, মাসটিতে উপস্থিত হবে, সে যেন তাতে সিয়াম পালন করে” [সূরা আল-বাকারাহ : ১৮৫]

 

সিয়াম পালনের ফযিলাত সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

 

«مَنْصَامَرَمَضَانَإِيمَانًاوَاحْتِسَابًاغُفِرَلَهُمَاتَقَدَّمَمِنْذَنْبِهِ »

 

‘‘যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে ইখলাস নিয়ে অর্থাৎ একনিষ্ঠভাবে আল্লাহকে সন্তুষ্টি করার জন্য রমাদানে সিয়াম পালন করবে, তার অতীতের সব গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে’’ [সহীহ বুখারী : ২০১৪]

 

«مَامِنْعَبْدٍيَصُوْمُيَوْمًافِيْسَبِيْلِاللهِإِلاَّبَاعَدَاللهُبِذَلِكَوَجْهَهُعَنِالنَّارِسَبْعِيْنَخَرِيْفًا»

 

‘‘যে কেউ আল্লাহর রাস্তায় (অর্থাৎ শুধুমাত্র আল্লাহকে খুশী করার জন্য) একদিন সিয়াম পালন করবে, তাদ্বারা আল্লাহ তাকে জাহান্নামের অগ্নি থেকে সত্তর বছরের রাস্তা পরিমাণ দূরবর্তীস্থানে রাখবেন’’। [সহীহ মুসলিম : ২৭৬৭]

 

[২] সময়মতসালাতআদায়করা

 

সিয়াম পালনের সাথে সাথে সময় মত নামায আদায় করার মাধ্যমে জান্নাতে যাওয়ার পথ সুগম হয়। কুরআন মাজীদে বলা হয়েছে,

 

﴿إِنَّٱلصَّلَوٰةَكَانَتۡعَلَىٱلۡمُؤۡمِنِينَكِتَٰبٗامَّوۡقُوتٗا١٠٣﴾ [النساء: ١٠٣]

 

‘নিশ্চয় সালাত মুমিনদের উপর নির্দিষ্ট সময়ে ফরয।’ [সূরা নিসা : ১০৩]

 

 এ বিষয়ে হাদীসে এসেছে,

 

«عَنْعَبْدِاللَّهِبْنِمَسْعُودٍقَالَقُلْتُيَانَبِيَّاللَّهِأَيُّالْأَعْمَالِأَقْرَبُإِلَىالْجَنَّةِقَالَالصَّلَاةُعَلَىمَوَاقِيتِهَا»

 

আব্দুল্লাহ ইবন মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর নবী! কোন আমল জান্নাতের অতি নিকটবর্তী? তিনি বললেন, সময় মত নামায আদায় করা। [সহীহ মুসলিম : ২৬৩]

 

[৩] সহীহভাবেকুরআনশেখা

 

রমাদান মাসে কুরআন অবতীর্ণ করা হয়েছে। এ মাসের অন্যতম আমল হলো সহীহভাবে কুরআন শেখা। আর কুরআন শিক্ষা করা ফরয করা হয়েছে। কেননা কুরআনে বলা হয়েছে,

 

﴿ٱقۡرَأۡبِٱسۡمِرَبِّكَٱلَّذِيخَلَقَ١﴾ [العلق: ١]

 

‘‘পড় তোমার রবের নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন’’ [সূরা আলাক : ১]

 

 রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরআন শেখার নির্দেশ দিয়ে বলেন,

 

« تَعَلَّمُواالْقُرْآنَ،وَاتْلُوهُ»

 

‘‘তোমরা কুরআন শিক্ষা কর এবং তিলাওয়াত কর’’ [মুসনাদ আলজামি : ৯৮৯০]

 

 [৪] অপরকেকুরআনপড়াশেখানো

 

রমাদান মাস অপরকে কুরআন শেখানোর উত্তম সময়। এ মাসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজে সাহাবীদেরকে কুরআন শিক্ষা দিতেন। এ বিষয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

 

«خَيْرُكُمْمَنْتَعَلَّمَالْقُرْآنَوَعَلَّمَهُ»

 

‘‘তোমাদের মধ্যে সর্বোত্তম ব্যক্তি সেই, যে নিজে কুরআন শিক্ষা করে ও অপরকে শিক্ষা দেয়’’ [সহীহ আল-বুখারী : ৫০২৭]

 

 

 

«مَنْعَلَّمَآيَةًمِنْكِتَابِاللهِعَزَّوَجَلَّ،كَانَلَهُثَوَابُهَامَاتُلِيَتْ»

 

‘যে আল্লাহর কিতাব থেকে একটি আয়াত শিক্ষা দিবে, যত তিলাওয়াত হবে তার সাওয়াব সে পাবে’ [সহীহ কুনুযুস সুন্নাহ আন-নবুবিয়্যাহ : ০৭]

 

[৫] সাহরীখাওয়া

 

সাহরী খাওয়ার মধ্যে বরকত রয়েছে এবং সিয়াম পালনে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। হাদীসে এসেছে,

 

«السُّحُورُأَكْلَةٌبَرَكَةٌفَلاَتَدَعُوهُ،وَلَوْأَنْيَجْرَعَأَحَدُكُمْجَرْعَةًمِنْمَاءٍ،فَإِنَّاللَّهَوَمَلاَئِكَتَهُيُصَلُّونَعَلَىالْمُتَسَحِّرِينَ»

 

‘‘সাহরী হল বরকতময় খাবার। তাই কখনো সাহরী খাওয়া বাদ দিয়ো না। এক ঢোক পানি পান করে হলেও সাহরী খেয়ে নাও। কেননা সাহরীর খাবার গ্রহণকারীকে আল্লাহ তা‘আলা ও তাঁর ফেরেশতারা স্মরণ করে থাকেন’’ [মুসনাদ আহমাদ : ১১১০১, সহীহ]

 

[৬] সালাতুততারাবীহপড়া

 

সালাতুত তারাবীহ পড়া এ মাসের অন্যতম আমল। তারাবীহ পড়ার সময় তার হক আদায় করতে হবে। হাদীসে এসেছে,

 

« مَنْقَامَرَمَضَانَإِيمَانًاوَاحْتِسَابًاغُفِرَلَهُمَاتَقَدَّمَمِنْذَنْبِهِ»

 

‘যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে সাওয়াব হাসিলের আশায় রমাদানে কিয়ামু রমাদান (সালাতুত তারাবীহ) আদায় করবে, তার অতীতের সব গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে’ [সহীহ আল-বুখারী : ২০০৯]

 

 তারাবীহ এর সালাত তার হক আদায় করে অর্থাৎ ধীরস্থীরভাবে আদায় করতে হবে। তারাবীহ জামায়াতের সাথে আদায় করা সুন্নাহ এর অন্তর্ভুক্ত। হাদীসে আছে,

 

«إِنَّهُمَنْقَامَمَعَالإِمَامِحَتَّىيَنْصَرِفَكُتِبَلَهُقِيَامُلَيْلَة»ٍ

 

‘‘যে ব্যক্তি ইমামের সাথে প্রস্থান করা অবধি সালাত আদায় করবে (সালাতুত তারাবীহ) তাকে পুরো রাত কিয়ামুল লাইলের সাওয়াব দান করা হবে’’ [সুনান আবূ দাউদ : ১৩৭৭, সহীহ]।

 

তারাবীররাকাতসংখ্যানিয়েবিস্তারিতজানতেএইলিংকগুলোদেখতেপারেনঃ 

 

 

  1. http://islamqa.info/bn/9036

 

  1. http://islamqa.info/en/82152

 

  1. http://islamqa.info/en/38021

 

 

[৭] বেশিবেশিকুরআনতিলাওয়াতকরা

 

এটি কুরআনের মাস। তাই এ মাসে অন্যতম কাজ হলো বেশি বেশি কুরআন তিলাওয়াত করা। হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

 

«مَنْقَرَأَحَرْفًامِنْكِتَابِاللهِفَلَهُبِهِحَسَنَةٌ،وَالحَسَنَةُبِعَشْرِأَمْثَالِهَا،لاَأَقُولُالْمحَرْفٌ،وَلَكِنْأَلِفٌحَرْفٌوَلاَمٌحَرْفٌوَمِيمٌحَرْفٌ»

 

‘‘যে ব্যক্তি কুরআনের একটি হরফ পাঠ করে, তাকে একটি নেকি প্রদান করা হয়। প্রতিটি নেকি দশটি নেকির সমান। আমি বলি না যে, আলিফ-লাম-মীম একটি হরফ। বরং আলিফ একটি হরফ, লাম একটি হরফ এবং মীম একটি হরফ’’ [সুনান আত-তিরমিযী: ২৯১০, সহীহ]।

 

 রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমাদান ব্যতীত কোন মাসে এত বেশি তিলাওয়াত করতেন না। আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,

 

«وَلاَأَعْلَمُنَبِىَّاللَّهِصلىاللهعليهوسلمقَرَأَالْقُرْآنَكُلَّهُفِىلَيْلَةٍوَلاَصَلَّىلَيْلَةًإِلَىالصُّبْحِوَلاَصَامَشَهْرًاكَامِلاًغَيْرَرَمَضَانَ».

 

‘‘রমাদান ব্যতীত অন্য কোনো রাত্রিতে আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লামকে পূর্ণ কুরআন তিলাওয়াত করতে, কিংবা ভোর অবধি সালাতে কাটিয়ে দিতে অথবা পূর্ণ মাস রোযা পালন করে কাটিয়ে দিতে দেখি নি’’ [সহীহ মুসলিম : ১৭৭৩]।

 

 [৮] শুকরিয়াআদায়করা

 

রমাদান মাস পাওয়া এক বিরাট সৌভাগ্যের বিষয়। সেজন্য আল্লাহ তা‘আলার বেশি বেশি শুকরিয়া আদায় করা এবং আগামী রমাদান পাওয়ার জন্য তাওফীক কামনা করা। রমাদান সম্পর্কে কুরআনে বলা হয়েছে,

 

﴿وَلِتُكۡمِلُواْٱلۡعِدَّةَوَلِتُكَبِّرُواْٱللَّهَعَلَىٰمَاهَدَىٰكُمۡوَلَعَلَّكُمۡتَشۡكُرُونَ١٨٥﴾ [البقرة: ١٨٥]

 

‘‘আর যাতে তোমরা সংখ্যা পূরণ কর এবং তিনি তোমাদেরকে যে হিদায়াত দিয়েছেন, তার জন্য আল্লাহর বড়ত্ব ঘোষণা কর এবং যাতে তোমরা শোকর কর।’’[সূরা আলবাকারাহ : ১৮৫]

 

﴿وَإِذۡتَأَذَّنَرَبُّكُمۡلَئِنشَكَرۡتُمۡلَأَزِيدَنَّكُمۡۖوَلَئِنكَفَرۡتُمۡإِنَّعَذَابِيلَشَدِيدٞ٧﴾ [ابراهيم: ٧]

 

‘‘আর যখন তোমাদের রব ঘোষণা দিলেন, ‘যদি তোমরা শুকরিয়া আদায় কর, তবে আমি অবশ্যই তোমাদের বাড়িয়ে দেব, আর যদি তোমরা অকৃতজ্ঞ হও, নিশ্চয় আমার আজাব বড় কঠিন’।’’ [সূরা ইবরাহীম : ৭]

 

 

 

আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিয়ামাতের শুকরিয়া আদায় করে বলতেন

 

« الْحَمْدُلِلَّهِعَلَىكُلِّحَالٍ »

 

অর্থাৎ সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য [সুনান আত-তিরমিযী : ২৭৩৮]

 

[৯] কল্যাণকরকাজবেশিবেশিকরা

 

এ মাসটিতে একটি ভাল কাজ অন্য মাসের চেয়ে অনেক বেশি উত্তম। সেজন্য যথাসম্ভব বেশি বেশি ভাল কাজ করতে হবে। আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

 

« وَيُنَادِىمُنَادٍيَابَاغِىَالْخَيْرِأَقْبِلْوَيَابَاغِىَالشَّرِّأَقْصِرْوَلِلَّهِعُتَقَاءُمِنَالنَّارِوَذَلِكَكُلَّلَيْلَةٍ »

 

‘‘এ মাসের প্রত্যেক রাতে একজন ঘোষণাকারী এ বলে আহবান করতে থাকে যে, হে কল্যাণের অনুসন্ধানকারী তুমি আরো অগ্রসর হও! হে অসৎ কাজের পথিক, তোমরা অন্যায় পথে চলা বন্ধ কর। (তুমি কি জান?) এ মাসের প্রতি রাতে আল্লাহ তায়ালা কত লোককে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিয়ে থাকেন’’ [সুনান আত-তিরমিযী : ৬৮৪]

 

 [১০] সালাতুততাহাজ্জুদপড়া

 

রমাদান মাস ছাড়াও সালাতুত তাহাজ্জুদ পড়ার মধ্যে বিরাট সাওয়াব এবং মর্যাদা রয়েছে। রমাদানের কারণে আরো বেশি ফজিলত রয়েছে। যেহেতু সাহরী খাওয়ার জন্য উঠতে হয় সেজন্য রমাদান মাসে সালাতুত তাহাজ্জুদ আদায় করার বিশেষ সুযোগও রয়েছে। আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত হাদীসে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

 

« أَفْضَلُالصِّيَامِبَعْدَرَمَضَانَشَهْرُاللَّهِالْمُحَرَّمُوَأَفْضَلُالصَّلاَةِبَعْدَالْفَرِيضَةِصَلاَةُاللَّيْلِ »

 

‘‘ফরয সালাতের পর সর্বোত্তম সালাত হল রাতের সালাত অর্থাৎ তাহাজ্জুদের সালাত’’ [সহীহ মুসলিম : ২৮১২]

 

[১১] বেশিবেশিদান-সদাকাহকরা

 

এ মাসে বেশি বেশি দান-সাদাকাহ করার জন্য চেষ্টা করতে হবে। ইয়াতীম, বিধবা ও গরীব মিসকীনদের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়া ও বেশি বেশি দান খয়রাত করা। হিসাব করে এ মাসে যাকাত দেয়া উত্তম। কেননা রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ মাসে বেশি বেশি দান খয়রাত করতেন। আবদুল্লাহ ইবনে আববাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত,

 

«كَانَالنَّبِيُّصلىاللهعليهوسلمأَجْوَدَالنَّاسِبِالْخَيْرِ،وَكَانَأَجْوَدُمَايَكُونُفِيرَمَضَانَ»

 

‘‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন মানুষের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দানশীল আর রমাদানে তাঁর এ দানশীলতা আরো বেড়ে যেত’’ [সহীহ আল-বুখারী : ১৯০২]

 

[১২] উত্তমচরিত্রগঠনেরঅনুশীলনকরা

 

রমাদান মাস নিজকে গঠনের মাস। এ মাসে এমন প্রশিক্ষণ নিতে হবে যার মাধ্যমে বাকি মাসগুলো এভাবেই পরিচালিত হয়।কাজেই এ সময় আমাদেরকে সুন্দর চরিত্র গঠনের অনুশীলন করতে হবে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

 

«وَالصِّيَامُجُنَّةٌفَإِذَاكَانَيَوْمُصَوْمِأَحَدِكُمْفَلاَيَرْفُثْيَوْمَئِذٍوَلاَيَسْخَبْفَإِنْسَابَّهُأَحَدٌأَوْقَاتَلَهُفَلْيَقُلْإِنِّىامْرُؤٌصَائِمٌ»

 

‘‘তোমাদের মধ্যে কেউ যদি রোযা রাখে, সে যেন তখন অশস্নীল কাজ ও শোরগোল থেকে বিরত থাকে। রোযা রাখা অবস্থায় কেউ যদি তার সাথে গালাগালি ও মারামারি করতে আসে সে যেন বলে, আমি রোযাদার’’ [সহীহ মুসলিম : ১১৫১]

 

[১৩] ই‘তিকাফকরা

 

ই‘তিকাফ অর্থ অবস্থান করা। অর্থাৎ মানুষদের থেকে পৃথক হয়ে সালাত, সিয়াম, কুরআন তিলাওয়াত, দোয়া, ইসতিগফার ও অন্যান্য ইবাদাতের মাধ্যমে আল্লাহ তা‘আলার সান্নিধ্যে একাকী কিছু সময় যাপন করা। এ ইবাদাতের এত মর্যাদা যে, প্রত্যেক রমাদানে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রমাদানের শেষ দশ দিন নিজে এবং তাঁর সাহাবীগণ ই‘তিকাফ করতেন। আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত,

 

« كَانَالنَّبِيُّصلىاللهعليهوسلميَعْتَكِفُفِيكُلِّرَمَضَانَعَشْرَةَأَيَّامٍفَلَمَّاكَانَالْعَامُالَّذِيقُبِضَفِيهِاعْتَكَفَعِشْرِينَيَوْمًا».

 

‘‘প্রত্যেক রমাযানেই তিনি শেষ দশ দিন ই‘তিকাফ করতেন। কিন্তু জীবনের শেষ রমযানে তিনি ইতিকাফ করেছিলেন বিশ দিন’’ [সহীহ আলবুখারী : ২০৪৪]। দশ দিন ই‘তেকাফ করা সুন্নাত।

 

[১৪] দাওয়াতেদ্বীনেরকাজকরা

 

রমাদান মাস হচ্ছে দ্বীনের দাওয়াতের সর্বোত্তম মাস। আর মানুষকে আল্লাহর দিকে ডাকাও উত্তম কাজ। এজন্য এ মাসে মানুষকে দ্বীনের পথে নিয়ে আসার জন্য আলোচনা করা, কুরআন ও হাদীসের দারস প্রদান, বই বিতরণ, কুরআন বিতরণ ইত্যাদি কাজ বেশি বেশি করা। আলকুরআনের ঘোষণা :

 

﴿وَمَنۡأَحۡسَنُقَوۡلٗامِّمَّندَعَآإِلَىٱللَّهِوَعَمِلَصَٰلِحٗاوَقَالَإِنَّنِيمِنَٱلۡمُسۡلِمِينَ٣٣﴾ [فصلت: ٣٣]

 

‘‘ঐ ব্যক্তির চাইতে উত্তম কথা আর কার হতে পারে যে আল্লাহর দিকে ডাকলো, নেক আমল করলো এবং ঘোষণা করলো, আমি একজন মুসলিম’’ [সূরা হা-মীম সাজদাহ : ৩৩]

 

 হাদীসে এসেছে,

 

«مَنْدَلَّعَلَىخَيْرٍفَلَهُمِثْلُأَجْرِفَاعِلِهِ »

 

‘‘ভাল কাজের পথ প্রদর্শনকারী এ কাজ সম্পাদনকারী অনুরূপ সাওয়াব পাবে’’ [সুনান আত-তিরমীযি : ২৬৭০]

 

 [১৫] সামর্থ্যথাকলেউমরাপালনকরা

 

এ মাসে একটি উমরা করলে একটি হাজ্জ আদায়ের সমান সাওয়াব হয়। আবদুল্লাহ ইবনে আববাস রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

 

«قَالَفَإِنَّعُمْرَةًفِيرَمَضَانَتَقْضِيحَجَّةًمَعِي».

 

‘‘রমাদান মাসে উমরা করা আমার সাথে হাজ্জ আদায় করার সমতুল্য’’ [সহীহ আলবুখারী : ১৮৬৩]

 

[১৬] লাইলাতুলকদরতালাশকরা

 

রমাদান মাসে এমন একটি রাত রয়েছে যা হাজার মাসের চেয়ে উত্তম। আল-কুরআনের ঘোষণা,

 

﴿لَيۡلَةُٱلۡقَدۡرِخَيۡرٞمِّنۡأَلۡفِشَهۡرٖ٣﴾ [القدر: ٣]

 

‘‘কদরের রাত হাজার মাসের চেয়েও উত্তম’’ [সূরা কদর : ৪]

 

 হাদীসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

 

«مَنْيَقُمْلَيْلَةَالْقَدْرِإِيمَانًاوَاحْتِسَابًاغُفِرَلَهُمَاتَقَدَّمَمِنْذَنْبِهِ».

 

‘‘যে ব্যক্তি ঈমান ও সাওয়াব পাওয়ার আশায় ইবাদাত করবে তাকে পূর্বের সকল গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে’’ [সহীহ আল-বুখারী : ৩৫]

 

 এ রাত পাওয়াটা বিরাট সৌভাগ্যের বিষয়। এক হাদীসে আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন,

 

«كَانَرَسُولُاللَّهِصلىاللهعليهوسلميَجْتَهِدُفِىالْعَشْرِالأَوَاخِرِمَالاَيَجْتَهِدُفِىغَيْرِهِ».

 

‘‘রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অন্য সময়ের তুলনায় রমদানের শেষ দশ দিনে অধিক হারে পরিশ্রম করতেন’’ [সহীহ মুসলিম : ১১৭৫]

 

 লাইলাতুল কদরের দো‘আঃ

 

আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বললেন, হে আল্লাহর নবী ! যদি আমি লাইলাতুল কদর পেয়ে যাই তবে কি বলব ? তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, বলবেঃ

 

«اللَّهُمَّإِنَّكَعَفُوٌّكَرِيمٌتُحِبُّالْعَفْوَفَاعْفُعَنِّى»

 

‘‘হে আল্লাহ আপনি ক্ষমাশীল, ক্ষমাকে ভালবাসেন, তাই আমাকে ক্ষমা করে দিন।’’ [সুনান আত-তিরমিযী : ৩৫১৩]

 

 [১৭] বেশিবেশিদো‘আওকান্নাকাটিকরা

 

দো‘আ একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদাত। এজন্য এ মাসে বেশি বেশি দো‘আ করা ও আল্লাহর নিকট বেশি বেশি কান্নাকাটি করা। হাদীসে এসেছে,

 

«إِنَّللهِتَعَالَىعِنْدَكُلِّفِطْرٍعُتَقَاءُمِنَالنَّارِ،وَذَلِكَكُلّلَيْلَةٍ»

 

‘‘ইফতারের মূহূর্তে আল্লাহ রাববুল আলামীন বহু লোককে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিয়ে থাকেন। মুক্তির এ প্রক্রিয়াটি রমাদানের প্রতি রাতেই চলতে থাকে’’ [আল জামিউস সাগীর : ৩৯৩৩]

 

 অন্য হাদীসে এসেছে,

 

«إِنَّللهَتَبَارَكَوَتَعَالَىعُتَقَاءفِيْكُلِّيَوْمٍوَلَيْلَةٍوَإِنَّهُلِكُلِّمُسْلِمٍفِيْكُلِّيَوْمٍوَلَيْلَةٍدَعْوَةمُسْتَجَابَة»

 

‘‘রমযানের প্রতি দিবসে ও রাতে আল্লাহ তা‘আলা অনেককে মুক্ত করে দেন। প্রতি রাতে ও দিবসে প্রতি মুসলিমের দো‘আ কবূল করা হয়’’ [সহীহ আত-তারগীব ওয়াত তারহীব : ১০০২]

 

 [১৮] ইফতারকরা

 

সময় হওয়ার সাথে সাথে ইফতার করা বিরাট ফজিলাতপূর্ণ আমল। কোন বিলম্ব না করা । কেননা হাদীসে এসেছে,

 

« إِذَاكَانَأَحَدُكُمْصَائِمًافَلْيُفْطِرْعَلَىالتَّمْرِفَإِنْلَمْيَجِدِالتَّمْرَفَعَلَىالْمَاءِفَإِنَّالْمَاءَطَهُورٌ »

 

‘‘যে ব্যক্তি সিয়াম পালন করবে, সে যেন খেজুর দিয়ে ইফতার করে, খেজুর না পেলে পানি দিয়ে ইফতার করবে। কেননা পানি হলো অধিক পবিত্র ’’ [সুনান আবু দাউদ : ২৩৫৭, সহীহ]

 

 

 

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন ইফতার করতেন তখন বলতেন :

 

« ذَهَبَالظَّمَأُوَابْتَلَّتِالْعُرُوقُوَثَبَتَالأَجْرُإِنْشَاءَاللَّهُ ».

 

“পিপাসা নিবারিত হল, শিরা উপশিরা সিক্ত হল এবং আল্লাহর ইচ্ছায় পুরস্কারও নির্ধারিত হল।” [সুনান আবূ-দাউদ: ২৩৫৯, সহীহ]

 

 অপর বর্ণনায় যে এসেছে

 

«اللَّهُمَّلَكَصُمْتُوَعَلَىرِزْقِكَأَفْطَرْتُ »

 

“হে আল্লাহ! তোমার জন্য রোযা রেখেছি, আর তোমারই রিযিক দ্বারা ইফতার করছি।” [সুনান আবু দাউদ :২৩৫৮] এর সনদ দুর্বল। আমাদের উচিত সহীহ হাদীসের উপর আমল করা।

 

 [১৯] ইফতারকরানো

 

অপরকে ইফতার করানো একটি বিরাট সাওয়াবের কাজ। প্রতিদিন কমপক্ষে একজনকে ইফতার করানোর চেষ্টা করা দরকার। কেননা হাদীসে এসেছে,

 

«مَنْفَطَّرَصَائِمًاكَانَلَهُمِثْلُأَجْرِهِمْ،مِنْغَيْرِأَنْيَنْقُصَمِنْأُجُورِهِمْشَيْء. »

 

‘‘যে ব্যক্তি কোন রোযাদারকে ইফতার করাবে, সে তার সমপরিমাণ সাওয়াব লাভ করবে, তাদের উভয়ের সাওয়াব হতে বিন্দুমাত্র হ্রাস করা হবে না’’ [সুনান ইবন মাজাহ : ১৭৪৬, সহীহ]

 

 [২০] তাওবাহওইস্তেগফারকরা

 

তাওবাহ শব্দের আভিধানিক অর্থ ফিরে আসা, গুনাহের কাজ আর না করার সিদ্ধান্ত নেয়া। এ মাস তাওবাহ করার উত্তম সময়। আর তাওবাহ করলে আল্লাহ খুশী হন। আল-কুরআনে এসেছে,

 

﴿يَٰٓأَيُّهَاٱلَّذِينَءَامَنُواْتُوبُوٓاْإِلَىٱللَّهِتَوۡبَةٗنَّصُوحًاعَسَىٰرَبُّكُمۡأَنيُكَفِّرَعَنكُمۡسَيِّ‍َٔاتِكُمۡوَيُدۡخِلَكُمۡجَنَّٰتٖتَجۡرِيمِنتَحۡتِهَاٱلۡأَنۡهَٰرُ﴾ [التحريم: ٨]

 

‘‘হে ঈমানদারগণ, তোমরা আল্লাহর কাছে তাওবা কর, খাটি তাওবা; আশা করা যায়, তোমাদের রব তোমাদের পাপসমূহ মোচন করবেন এবং তোমাদেরকে এমন জান্নাতসমূহে প্রবেশ করাবেন যার পাদদেশে নহরসমূহ প্রবাহিত’’ [সূরা আত-তাহরীম : ৮]

 

 রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

 

« يَاأَيُّهَاالنَّاسُتُوبُواإِلَىاللَّهِفَإِنِّىأَتُوبُفِىالْيَوْمِإِلَيْهِمِائَةَمَرَّةٍ ».

 

‘‘হে মানবসকল! তোমরা আল্লাহর নিকট তাওবাহ এবং ক্ষমা প্রার্থনা কর, আর আমি দিনে তাঁর নিকট একশত বারের বেশি তাওবাহ করে থাকি’’ [সহীহ মুসলিম : ৭০৩৪]

 

 তবে তাওবাহ ও ইস্তেগফারের জন্য উত্তম হচ্ছে, মন থেকে সাইয়্যেদুল ইস্তেগফার পড়া, আর তা হচ্ছে,

 

«اللَّهُمَّأَنْتَرَبِّيلَاإِلَهَإِلَّاأَنْتَخَلَقْتَنِيوَأَنَاعَبْدُكوَأَنَاعَلَىعَهْدِكَوَوَعْدِكَمَااسْتَطَعْتُأَعُوذُبِكَمِنْشَرِّمَاصَنَعْتُأَبُوءُلَكَبِنِعْمَتِكَعَلَيَّوَأَبُوءُلَكَبِذَنْبِيفَاغْفِرْلِيفَإِنَّهُلَايَغْفِرُالذُّنُوبَإِلَّاأَنْتَ»

 

‘‘হে আল্লাহ, তুমি আমার প্রতিপালক, তুমি ছাড়া প্রকৃত এবাদতের যোগ্য কেউ নাই। তুমি আমাকে সৃষ্টি করেছ, আর আমি তোমার গোলাম আর আমি সাধ্যমত তোমার সাথে কৃত অঙ্গীকারের উপর অবিচল রয়েছি।আমার কৃত-কর্মের অনিষ্ট থেকে তোমার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আমাকে যত নেয়ামত দিয়েছে সেগুলোর স্বীকৃতি প্রদান করছি। যত অপরাধ করেছি সেগুলোও স্বীকার করছি। অত:এব, তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও। কারণ, তুমি ছাড়া ক্ষমা করার কেউ নেই।’’

 

ফযিলাত: ‘‘যে কেউ দৃঢ় বিশ্বাসের সাথে দিনের বেলা এই দু‘আটি (সাইয়েদুল ইসতিগফার) পাঠ করবে ঐ দিন সন্ধ্যা হওয়ার আগে মৃত্যু বরণ করলে সে জান্নাতবাসী হবে এবং যে কেউ ইয়াকিনের সাথে রাত্রিতে পাঠ করবে ঐ রাত্রিতে মৃত্যুবরণ করলে সে জান্নাতবাসী হবে।’’ [সহীহ আল-বুখারী : ৬৩০৬]

 

 [২১] তাকওয়াঅর্জনকরা

 

তাকওয়া এমন একটি গুণ, যা বান্দাহকে আল্লাহর ভয়ে যাবতীয় পাপকাজ থেকে বিরত রাখে এবং তাঁর আদেশ মানতে বাধ্য করে।আর রমাদান মাস তাকওয়া নামক গুণটি অর্জন করার এক বিশেষ মৌসুম। কুরআনে এসেছে,

 

﴿يَٰٓأَيُّهَاٱلَّذِينَءَامَنُواْكُتِبَعَلَيۡكُمُٱلصِّيَامُكَمَاكُتِبَعَلَىٱلَّذِينَمِنقَبۡلِكُمۡلَعَلَّكُمۡتَتَّقُونَ١٨٣﴾ [البقرة: ١٨٣]

 

‘‘হে ঈমানদারগণ! তোমাদের উপর রোযা ফরয করা হয়েছে যে

ডাউনলোড